হ্যালো বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আজ আপনাদের মাঝে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আজকের বিষয় হলো “গেমস আসক্তি থেকে মুক্তি পাবেন কিভাবে”।

বর্তমান সময়টা এমন একটি পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে মোবাইল কম্পিউটার ছাড়া যেন চলাই যায় না। এগুলো ছাড়া নিজেকে মনে হয় অসম্পূর্ণ ।আমরা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার ছাড়া এক মুহূর্ত চলতে পারি না। এখন আমাদের অবসর সময় গুলো কাটে মোবাইল ফোনে, কম্পিউটারে, টিভি দেখে। এক কথায় বলতে গেলে আমরা ভারচুয়াল জগতের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেছি।

এখন আর দেখতে পাওয়া যায়না খেলার মাঠের সেই কোলাহল। আগে যে পরিমাণে সময় নিয়ে খেলাধুলা হতো সেটি এখন আর নেই। বাস্তব জীবনে খেলাধুলা খুবই কমে গেছে, ঠিক তার বিপরীতে ভার্চুয়াল জগতে ব্যাপক খেলাধুলার হার বেড়ে গেছে। এখন সবাই ভার্চুয়াল জগতে গেম খেলতেই বেশি পছন্দ কর।

বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে গেম খেলার প্রতি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছে, যে কারনে বাস্তব জীবন বলেও যে একটা কথা আছে সেটাও এখন ভুলে গিয়েছে। তাদের জীবনের কোনো লক্ষ্য নেয়।তারা শুধু মাত্র গেমস খেলতে পারলেই হলো।গেমস টাকেই তারা নিজের জীবন মনে করে। সব সময় শুধু গেমস ই খেলে। তারা চাইলেও এই নেশা থেকে বের হতে পারে না। যে কারনে তৈরি হচ্ছে নানান ধরনের সমস্যা।

তাহলে এখন আমাদের কি করনীয়, আমরা কি এই নেশা ছাড়তে পারবো না। এই নেশা থেকে কি মুক্তির কোনো উপায় নেয়। যদি আপনি এই সকল বিষয় নিয়ে চিন্তিত, তাহলে বলবো চিন্তার কিছু নেয়, আপনি চাইলেই এই সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্তি করতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা অনেক মানুষের মাঝে এক্সপিরিমেন্ট চালিয়ে বেশ কিছু বিষয় খুজে পেয়েছে, যেগুলোকে অনুসরণ করলে যে কেও এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারেন।

অনলাইন গেম থেকে দূরে থাকা

মানুষ গেম খেলে বিনোদনের জন্য। অবসর সময়ে সময় কাটানোর জন্য। এজন্য আমরা নানান ধরনের গেম ডাউনলোড করে থাকি। যে সকল গেম খেলতে ভালো লাগে সেগুলো বার বার খেলে থাকি।

যখনি আমরা কোনো অনলাইন গেম খেলা শুরু করি, তখন একটি অন্য রকম ফিলিংস কাজ করে। অনলাইন গেমের মাধ্যমে আমরা একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকি। যে কারনে এই গেম গুলো খেলার নেশা প্রচুর হয়ে থাকে।

অনলাইনে দেখা যায় আপনার সকল বন্ধু বান্ধব সেই গেম খেলছে। যে কারনে আপনার ও ইচ্ছা জাগে তাদের সাথে খেলার। আর এই ইচ্ছা টিই এক সময় নেশায় পরিনত হয়ে যায়। তখন গেম ছাড়া কোনো কিছুই ভালো লাগে না। যা আমাদের গেম এর প্রতি আসক্ত করে দেয়।

তাই আমাদের যত বেশি সম্ভব অনলাইন গেম খেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

ট্রেন্ডিং গেম খেলা থেকে দূরে থাকা

ট্রেন্ডিং গেম হলো যেগুলো গেম সাম্প্রতিক সময়ে খুবই পপুলার। সকলের কাছেই এই গেম পাওয়া যায়। সবাই এই গেম গুলো খেলতে পছন্দ করে । এই গুলো গেম খেলতে শুরু করলে আপনিও অল্পতেই আসক্ত হয়ে পড়বেন।

তাই আপনাদের উচিত ট্রেন্ডিং যত গেম আছে সে সকল গেম খেলা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। আপনাদের আরো সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেয়, আপনাদের আশেপাশে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন সকলেই কোন না কোনো একটি গেম নিয়ে ব্যস্ত আছে। তারা যে গেম গুলো খেলে অন্য কেও দেখলে তারও মনে গেম খেলার ইচ্ছা জাগে। যেমন এখন যেখানেই যান না কেন ফ্রি ফায়ার পাবজি গেম খেলা না এমন মানুষ কম দেখতে পাবেন।

এগুলো হলো নেশার গেম। তাই এমন ধরনের গেম খেলা থেকে নিতে বিরত রাখতে হবে।

ছোট বাচ্চাদের মোবাইল ফোন না দেওয়া

ছোট রা সব সময় করে বড়দের। তাই আপনি যদি ছোটদের অল্প বয়সেই মোবাইল ফোন দিয়ে থাকেন তাহলে তারা কি শিখতে পারবে। তারা ছোট থেকেই নানান ধরনের গেম খেলা শুরু করে দিবে। যা তাদের মানসিক বিকাশ এ ব্যাঘাত ঘটাবে। তাদের যদি একবার মোবাইলের প্রতি নেশা হয়ে যায় তাহলে সহজে আর এটি দূর করা যাবে না। অল্প বয়সেই চোখের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। এক কথায় নানান সমস্যা সৃষ্টি হবে।

তাই আপনাদের উচিত হবে ছোটদের অল্প বয়সে মোবাইল ফোন না দেওয়া।

পরিবার ও বন্ধুদের সময় দেওয়া

আপনি যদি নেশায় আসক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার উচিত হবে যত বেশি পারেন পরিবার কে সময় দেওয়া। পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে সময় কাটানো। পরিবারের নানান ধরনের কাজে সাহায্য করা। এতে আপনারা মোবাইল এর পরি আপনার আকর্ষণ কমে যাবে।

ভার্রচুয়াল জগত থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বন্ধুদের সাথে অবসর সময়ে আড্ডা দিতে হবে। এর ফলে মন পরিষ্কার থাকবে।নিজেকে চিন্তা মুক্ত রাখবেন। তাহলে আপনার মোবাইলের প্রতি থাকা চাহিদা আসতে আসতে কমে আসা শুরু করবে।

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা

বই মানুষের অন্যতম একটি বন্ধু। মানুষের অবসর সময় কাটানোর জন্য অন্যতম সঙ্গী হলো বই। অবসর সময়ে মোবাইল চিপে সময় নষ্ট না করে বই পড়তে হবে। বই পড়লে জ্ঞান অর্জন করা যাবে সাথে মোবাইলে আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

যে কারনে যত বেশি সম্ভব আমাদের বই এর প্রতি মনোযোগ বাড়াতে হবে। অবসর সময় গুলোতে মজার মজার গল্পের বই পড়া, মেগাজিন, কারেন্ট নিউজ, খবরের কাগজ এ সকল কিছু পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। যা আমাদের বিনোদন ও দেবে সাথে জ্ঞান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

ঘুমানোর সময় মোবাইল ব্যবহার না করা

মোবাইল থাকলে রাতে চাপতে ইচ্ছা করবেই। আর আপনি যদি রাতে মোবাইল চাপা শুরু করেন, তাহলে কখন আপনার অনেক সময় চলে যাবে তা আপনি নিজেও বলতে পারবেন না। তাই রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন রেখে দিতে হবে। এজন্য ঘুমাতে যাওয়ার সময় ফোন চার্জ এ দিয়ে সুয়ে পড়বেন৷ ফোন আপনার যত কাছাকাছি থাকবে ততই মোবাইলের প্রতি নেশা বাড়তে থাকবে। তাই যত বেশি পারবেন মোবাইল ফোনটি আপনার কাছ থেকে দূরে রাখবেন।

আমাদের শেষ কথা

আশাকরি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে আপনারা মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি পাবেন। যদি আপনি আসলেই খুবই আসক্ত হয়ে পড়েন তাহলে উপরের দেওয়া টিপস গুলো ফলো করবেন। যদি ভুলে যান তাহলে বার বার পড়ে নেবেন। আশাকরি আপনারা এই সকল টিপস অনুসরন করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

আজ এ পর্যন্তই। আপনাদের যদি এই আরটিকেল টি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে ভুলবেন না।