হ্যালো বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আপনাদের সকলকে জানায় ডেইলি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর পক্ষ থেকে স্বাগতম। আমরা প্রতিদিনই চাই আপনাদের নতুন কিছু জানাতে। প্রতিদিনের মত আজকেও নিয়ে এসেছি নতুন একটি বিষয়, আজকের বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার উপায় নিয়ে। সাথে আপনারা কিভাবে পড়াশোনা করলে অবশ্যই চান্স পাবেন তার সকল খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানাতে।
স্বপ্ন যদি হয় বিশ্ববিদ্যালয় তবে করতে হবে কিছু কষ্ট জয়। একটি প্রবাদ রয়েছে আপনাদের কে মনে করিয়ে দেয় “কষ্ট করলে কেস্ট পাওয়া যায় ” তাই সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।তাই সকলের প্রয়োজন সময়ের গুরুত্ব দেওয়া।
সকল ছাত্র-ছাত্রীরেই ইচ্ছা থাকে HSC পাশ করার পর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার। তাই এজন্য প্রয়োজন হয় কঠিন সাধনা করার। প্রচুর চেষ্টা এবং ধৈর্য ধরে পড়াশোনায় সব সময় লেগেই থাকতে হয়।
আমাদের পড়াশোনা স্ততরের সর্বশেষ পর্যায় হলো বিশ্ববিদ্যালয়।তাই এই সময়ে আমাদের প্রচুর পরিমাণে চেষ্টা ও পরিশ্রম করতে হবে।কথায় আছে “শেষ ভালো যার সব ভালো তার”। যে কারনে শিক্ষা জীবনের শেষ টাও প্রত্যকের ভালো হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া খুবই জরুরি।
আমদের দেশে একটি সিট পাওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে যুদ্ধের সাথে লড়ে জয়ী হতে হয়। কেননা প্রতি বছর প্রায় ২০+ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী Hsc পাশ করে থাকে। এর পর সকলের ওই ইচ্ছা থাকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার। আর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট সংখ্যা প্রায় ১ হাজারের মতো। এই কয়টি সীট দখল করার জন্য পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী। তার মানে বুঝতেই পারছেন একটি সিটের জন্য লড়ায় করে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী। আপনি যদি সিট পেতে চান তাহলে আপনাকেও লড়াই করেই সীট দখল করতে হবে। তাই আপনারা যেন অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকেন সেজন্য অনেক বিষয় মাথায় রেখে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। এখন আপনাদের জানাবো কি কি বিষয় মাথায় রেখে পড়াশোনা করবেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে কি কি করতে হবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পেতে হলে অনেক কিছুই করতে হয়। নিজের মধ্যে একটি সংকল্প গড়ে তুলতে হয়।এছাড়াও আরো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে যা অনুসরণ করা খুবই জরুরি।
তাহলে চলুন প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা এখন আপনারা জেনে নিন কিভাবে নিজেকে গড়ে তুললে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এ আপনারা চান্স পাবেন। আপনারা নিচে দেওয়া টিপস গুলো অনুসরন করলে আশাকরি বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা অনেকটা এগিয়ে যবেন।
লক্ষ্য কে স্থির করে নেওয়া
প্রথমেই আপনাকে লক্ষ্য স্থির করতে হবে। আপনি কি করতে চান, আপনার ক্যরিয়ারকে ৫/৬ বছর পর কোন পজিশন এ দেখতে চান, এই বিষয়টি এখনই আপনাকে ভাবতে হবে। যে কারনে এখনই আপনাকে লক্ষ্য স্থির করে নিতে হবে।
কারণ আপনার লক্ষ্যই বলে দেবে আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে। আপনি যদি ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চান তাহলে বর্তমান সময়ে অবশ্য আপনাকে কষ্ট করতে হবে। কষ্টের পরেই আসে সুখ।
তাই আপনার ইচ্ছা যদি থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার তাহলে আপনি কোন বিভাগে পড়ছেন এটা কোন বিষয় না। আপনি যে বিভাগেই পড়ুন না কেন সব বিভাগ থেকেই চান্স পাবেন। অনেকের মনে দূর্বলতা রয়েছে আমি কি পারবো,আমার দ্বারা কি হবে।
তাই সহজ কথায় বলি ভাই, আপনার লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনিও এই যুদ্ধ ক্ষেত্রের পরিক্ষাতেও পাশ করে যাবেন। এজন্যই লক্ষ্য স্থির করতে হবে।
পরিকল্পনা গঠন করা
যখন কোনো দেশে যুদ্ধ হয়, তখন যুদ্ধে যাওয়ার আগে সেই দেশটি বেশ কিছুদিন ধরেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তারা কিভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। কোথায় আগে আক্রমণ করবে। কি পরিমানে অস্ত্র ব্যবহার করবে, সব কিছুর জন্যই বেশ কিছুদিন ধরে তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
তারা লক্ষ্য স্থির করে রাখে যে তাদের স্বাধীনতা লাগবেই। যে কারনে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনাও গঠন করে।পরিকল্পনা যত ভালো হবে তাদের যুদ্ধ ক্ষেত্রে ততই এগিয়ে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্ষাও একটি যুদ্ধের থেকে কম নয়। এখানেও আপনাদের লক্ষ্যকে স্থির করে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়। তাই আপনি কোন সময়ে কি করবেন, কি কি বিষয় আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কোন গুলো তুলনা মূলক কম গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয় গুলো আপনাদের বিবেচনা করতে হবে। তাই আপনাদের উচিত হবে পড়ার টেবিলে বসে এই বিষয়ে একটি পরিকল্পনায় তৈরি করে ফেলা।
সিলেবাস সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে নেওয়া
সিলেবাস সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কোন কোন বিষয়ের ওপর পরিক্ষা হয়ে থাকে, কোন বিষয় এ কত মার্ক রয়েছে এই সকল বিষয় আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। এর ফলে আপনি নানান ধরনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন, যেমন সেই বিষয় গুলো আপনি HSC তেই ভালো ভাবে সম্পূর্ণ করে নিতে পারবেন। এর ফলে আপনার একটু হলেই চাপ কমে যাবে।
তাই আপনাদের উচিত হবে সিলেবাস সম্পর্কে একদম ক্লিয়ার জ্ঞান রাখা।
সব কিছুতে সিরিয়াস হওয়া
আপনার ভবিষ্যত নির্ভর করে আপনার ছোট্ট একিটি ডিসিশন এর উপর। তাই এখন থেকেই ছোট ছোট বিষয় গুলোর উপর সিরিয়াস হতে হবে।
যেমনঃ সময় অপচয় হয় এমন কাজ কর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনাদের এই সময়ে অতিরিক্ত আড্ডা দেওয়া বন্দ করতে হবে। বন্ধুদের সময় কম দিতে হবে। পড়াশোনার প্রতি ফোকাস করতে হবে। যে সকল জিনিস আমাদের সময়কে অপচয় যেমন মোবাইল ফোন, ফেসবুক, ইউটিউব এই গুলো থেকে বিরত রাখতে হবে।
তাই সব সময় এই ধরনের ছোট ছোট বিষয় গুলো নিয়েও সিরিয়াস হতে হবে।
মুখস্থ বিদ্যা থেকে বেরিয়ে আসা
আমাদের সকলের মাঝে একটি কমন বিষয় দেখা যায়, যেটি হলো মুখস্থ করে পড়া মনে রাখা। কিন্তু এটা করার ফলে অনেক সময় ব্যয় হয় সাথে কিছু ভুলে গেলে গোটা বিষয়টিও আর মনে আসে না।
তাই আমরা যখন পড়বো তখন অবশ্যই বুঝে বুঝে পড়বো এবং যেগুলো গুরুপূর্ণ বিষয় সেগুলো মুখস্থ করবো। সব সময় বুঝে বুঝে পড়তে এই বিষয়টা মনে রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিক্ষায় মুখস্থ বিদ্যা তেমন কোনো কাজে আসে না। যেটি কাজে আসে সেটি হলো সাধারন জ্ঞান। আর বুঝে বুঝে মনে রাখা সেই সকল বিষয় গুলো৷ তাই মুখস্থ বিদ্যা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে৷
সাধারণ জ্ঞান অর্জন করা
আপনার যত বেশি পারেব সাধারণ জ্ঞান অর্জন করবেন। আপনার IQ নলেজ যত বেশি হবে। ততই আপনার মাঝে কনফিডেন্স আসবে।
এজন্য আপনারা প্রতি মাসের কারেন্ট নিউজ গুলো পড়বেন। আশাকরি আপনারা যদি প্রতি মাসে ২/৩ টা করে কারেন্ট নিউজ গুলো পড়ে শেষ করতে পারেন তাহলে আপনাদের আলাদা করে আর সাধারণ জ্ঞান এর বই পড়া লাগবে না। তাই আপনারা নিয়মিত কারেন্ট নিউজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
মনকে সব সময় লক্ষ্যের দিকে ফোকাস করা
আপনার মন এই সময়ে নানান কিছু করতে চাইবে। পড়াশোনা করার ইচ্ছা হবে না। বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরা করার ইচ্ছা করবে, নতুন নতুন প্রেম করার ইচ্ছা হবে। যেভাবে সময় আপনার অপচয় হয় এই সকল কাজ আপনাদের বেশি করার ইচ্ছা করবে।
তাই আপনারা এই সকল বিষয়কে পাত্তা না দিয়ে নিজের মনকে লক্ষ্যর দিকে নিয়ে আসতে হবে। মনকে বোঝাতে হবে এখন যদি ক্যারিয়ারের পিছনে সময় দেয়, তাহলে একদিন এই সময়ের গুরুত্ব ক্যারিয়ার তোমাকে দেবে।
তাই সব সময় মনকে লক্ষ্যর দিকে ফোকাস দিতে হবে।
আমাদের শেষ কথা
প্রথমেই আপনাদের বলেছি “যদি স্বপ্ন হয় বিশ্ববিদ্যালয় তাহলে করতে হবে কিছু কষ্ট জয়। তাই আপনারা নিজের সেরাটি চেষ্টা করবেন। নিয়মিত পড়াশোনা করবেন। আপনারা ততক্ষন পড়বেন যতক্ষন আপনার মনে শান্তি পাবেন না। আপনি পড়তেই থাকুন, সাথে নতুন নতুন অনেক কিছু জানুন। আপনারা দিনে কমপক্ষে ১২/১৩ ঘন্টা পড়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আশাকরা যায় আপনারা নিশ্চয় ভাল কিছু একটা ফল পাবেন।
পরিশেষে এটাই বলতে চায়, আপনারা পড়ুন, পড়লে সব কিছুই সম্ভব। কখনো হাল ছেড়ে দেবেন না। আজ এ পর্যন্তই।
আশাকরি আপনাদের এই আরটিকেলটি ভালো লেগেছে। আরো এমন নতুন নতুন আরটিকেল পড়তে চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন। আরটিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন।
লেখকঃ তুহিন(DU)