রসুন এমন একটি উপাদান যেটি প্রতিদিন ই আমরা দৈনন্দিন খাবারে ব্যবহার করে থাকি যা আমাদের রুচি বর্ধক হিসেবে কাজ করে ।এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।নিঃসন্দেহে রসুন আমাদের জন্য উপকারী একটি খাদ্য উপাদান। রসুন বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। রসুন রক্তের কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। তাছাড়াও রসুনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যেটির নাম হল এলিসন।এই এলিসন উপাদানটি ক্যান্সার সহ আরো বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বিশেষজ্ঞদের মতে যে সকল মানুষ নিয়মিত রসুন খাবার অভ্যাস গড়ে তুলেন, তারা অন্যদের তুলনায় অনেক সুস্থ থাকেন। আসুন এখন জেনে নেওয়া যাক রসুন খেলে এর উপকারিতা কি ও এর ভেষজগুন সমূহ।
রসুনের উপকারিতা
১.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
রসুনে এক প্রকার অ্যান্টিবক্যাটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যেটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কাঁচা রসুন খুবই উপকারী দেহের জন্য।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে রসুন খেলে এর উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।খালি পেটে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দ্রুত কাজ করে থাকে।তাই প্রতিদিন সকালে দুই কোয়া রসুন খেতে পারেন, এতে অনেক উপকৃত হবেন।
২.রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে
শরীরে অনেক সময় রক্ত চলাচল গতি কমে যায়।ফলে শরীর দূর্বল হয়ে পড়ে।মাঝে মাঝেই রক্তের চলাচল এ অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা সমাধান এ কাঁচা রসুন প্রতিদিন খেলে রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিদিন কাঁচা রসুনের দুই তিন কোয়া খেতে হবে।
৩.পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বেশ সহায়ক
পুরুষ মানুষের যৌন ক্ষমতা বিভিন্ন কারনে কমে যেতে পারে।পুরুষের ক্ষমতা ফিরে পেতে হলে নিয়মিত কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।নিয়মিত কাঁচা রসুন খেলে ধীরে ধীরে শরীরে শক্তি ফিরে আসে।বিশেষজ্ঞরা রসুনে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির উপাদান সমূহ খুঁজে পেয়েছেন। তাই যাদের এই সমস্যা রয়েছে তারা এই উপায়টি অবলম্বন করতে পারেন, এতে আপনারা উপকৃত হবেন।
আরো পড়ুনঃআনারসের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন।
৪.উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
উচ্চ রক্তচাপ এর সমস্যায় অনেকে ভোগেন। রক্তচাপ কমানোর অন্যতম উপায় হলো কাঁচা রসুন। শরীরে এলডিএল বেড়ে গেলেই উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়।তাই নিয়মিত সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তাহলে রক্তচাপ জনিত সমস্যা থাকবে না।
৫.ঠান্ডা ও কফ সমস্যা সমাধানে
শরীরে ঠান্ডা ও কফ সমস্যা দেখা দিলে রসুন খেতে হবে। এটি এই সমস্যা সমাধানে এন্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে।এটি কফের ইনফেকশন থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে।এছাড়াও শরীরের আরো বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে রসুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ও সুস্থ থাকতে নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

রসুনের অপকারিতা
রসুন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য যেমনি উপকারী ঠিক তেমনি এর কিছু আপকারিতাও রয়েছে। পরিমাণের অধিক রসুন খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।দিনে দুই কোয়ার বেশি কাঁচা রসুন খাওয়া ঠিক নয়।যে সকল রসুন নরম হয়ে যায়,সে সকল রসুনের গুনাগুন ক্ষমতা কমে যায়,তাই সেই সকল রসুন না খাওয়া।অধিক পরিমাণে রসুন খাওয়ার ফলে তা বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।যে সকল মানুষের রসুন খেলে এলার্জীর পরিমাণ বেড়ে যায় তাদের রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কাঁচা রসুন এ এক প্রকার গন্ধ থাকে। তাই বেশি পরিমাণে রসুন খাওয়ার ফলে মুখে দূর্গন্ধ দেখা দিবে। তাই পরিমাণ মত খেতে হবে। রক্ত জমাট বাধঁতে রসুন বাধা প্রদান করে। তাই যাদের শরীরে রক্তের জমাট বাঁধতে সমস্যা আছে, তাদের বেশি রসুন খাওয়া ঠিক নয়। বেশি পরিমাণে রসুন খেলে মাথা ঘোরা,ডায়রিয়া,যকৃতের ক্ষতি সহ আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়।তাই এই সকল রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হলে পরিমাণ মত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।